মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩১ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মুরাদ হোসেন, হাবিপ্রবি দিনাজপুর :
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্রদের জন্য সবচেয়ে বড় আবাসিক হল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলে এটাচ ছাত্র সংখ্যা ২১৭০। এই হলে একইসাথে প্রায় ৮৫২ জন ছাত্র সিট পেতে পারে (আবাসন সুবিধা পায়)। ৫ আগস্টের পূর্বে হলটিতে অবস্থানরত বর্তমান অধ্যয়নরত ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবাসিক ছিলেন মাত্র ১০০-১২০ জন। যা ওই হলের সিট সংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ। একই অবস্থা ছাত্রদের প্রায় সবকটি আবাসিক হলেই। বিভিন্ন সূত্র মতে, হলে অবস্থান করেও অনাবাসিক রয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। আবাসিকীকরণে রয়েছে তাদের অনীহা। তবে তাদেরকে আবাসিক করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন হল প্রশাসন। এ অনুসারে ডিসেম্বর পর্যন্ত জিয়া হলে নতুন আবাসিক শিক্ষার্থী সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫০ জন। শেখ রাসেল হলের হল সুপার প্রফেসর ড. মোঃ হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ‘৫ আগস্টের পূর্বে একজন শিক্ষার্থীও আবাসিক ছিল না শেখ রাসেল হলে। অথচ সবাই আবাসিক সুবিধা পেত। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। আবাসিকীকরণ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। হলে অবস্থানরত সবাইকে খুব শিঘ্রই আবাসিক করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’ হল সুপারবৃন্দেরা বলেন, ‘আবাসিকীকরণে অনীহার নির্দিষ্ট কারণ আমাদের অজানা। আমরা বারবার বলছি, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা তা মানছেনা। একেক ছাত্র একেক সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসে। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ এদিকে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরেও আবাসন সংকট কাটেনি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও ইন্টারন্যাশনাল হল বাদেই ছেলেদের চারটি এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য চারটি আবাসিক হল রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্যমতে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১২০৩ জন। এদের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা এবং শহর-টার্মিনালের বিভিন্ন মেসে অবস্থান করছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ‘হলে থাকার সুযোগ না পেয়ে বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মেস বা বাসায় অবস্থান করতে হচ্ছে তাদের। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখে পড়ছেন ছাত্রীরা। অন্য সমস্যাগুলোর পাশাপাশি নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়ে থাকতে হয় তাদের। মাঝেমধ্যেই স্থানীয়দের হয়রানির শিকার হচ্ছেন মেসে থাকা ছাত্রীরা। মেসে থাকা ছাত্রদের সমস্যাও কম নয়।’ পূর্বে বিভিন্ন কারণে আবাসিক সংকটে থাকতেন শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা বিভিন্ন মেসের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় চাইলেও নতুন আবাসিক ভবন নির্মাণে বাঁধা আসতো। যদিও আবাসিক সমস্যা দূরীকরণে বঙ্গবন্ধু হল, পরে শেখ সায়েরা খাতুন হল নির্মান করা হয়। তাতে সব মিলিয়ে অর্ধেক পরিমাণ শিক্ষার্থীরও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত হয়না। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু সিট বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে আবেদন চেয়ে আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে হল প্রশাসন। সেটি এখনো প্রক্রিয়াধীন। এটা সম্পন্ন হলেও অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী অনাবাসিক থেকে যাবে। আবাসিক সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থাগ্রহণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম শিকদার বলেন, ‘চারটি দশতলাবিশিষ্ট আবাসিক হলের (২টি ছেলেদের, ২টি মেয়েদের) প্রজেক্ট সাবমিট করা হয়েছে। এটি পাশ হলেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে আবাসিক সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে বলে আশা রাখি।’